Author name: Muhammad Rifat

Blogs

ঘুম না আসার কারণ কি ? দ্রুত ঘুমানোর টেকনিক

ঘুম না আসা বা অনিদ্রা অনেকের জন্যই একটা বড় সমস্যা। এর অনেকগুলো কারণ থাকতে পারে, আর কারণ অনুযায়ী প্রতিকার ও উপায় আলাদা হতে পারে। ঘুম না আসার কিছু সাধারণ কারণ:  * মানসিক চাপ ও উদ্বেগ: চিন্তা, উদ্বেগ, ডিপ্রেশন ইত্যাদি মানসিক অবস্থা ঘুম ব্যাহত করতে পারে।  * অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা: অনিয়মিত ঘুমের সময়সূচী, ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল গ্রহণ, ধূমপান, ভারী খাবার খাওয়া ইত্যাদি ঘুম ব্যাহত করতে পারে।  * কিছু রোগ: থাইরয়েড জনিত সমস্যা, অ্যাজমা, অ্যাসিডিটি, দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ইত্যাদি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।  * কিছু ঔষধ: কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ঘুম না হওয়ার সমস্যা হতে পারে।  * পরিবেশগত কারণ: অতিরিক্ত আলো, শব্দ, অস্বস্তিকর তাপমাত্রা ইত্যাদি ঘুম ব্যাহত করতে পারে। প্রতিকার ও উপায়:  * ঘুমের একটি নিয়মিত রুটিন তৈরি করা: প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠা গুরুত্বপূর্ণ।  * ঘুমানোর আগে শিথিল হওয়া: গরম পানিতে স্নান, বই পড়া, হালকা সঙ্গীত শোনা ইত্যাদি করতে পারো।  * ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা: অন্ধকার, শান্ত এবং ঠান্ডা ঘরে ঘুমাও।  * দিনের বেলা ক্যাফেইন এবং অ্যালকোহল গ্রহণ কমানো।  * নিয়মিত ব্যায়াম করা: তবে ঘুমানোর ঠিক আগে ব্যায়াম না করা ভালো।  * স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া: ঘুমানোর কিছুক্ষণ আগে ভারী খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।  * পর্যাপ্ত সূর্যের আলো পাওয়া।  * চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া: যদি ঘুমের সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। কিছু অতিরিক্ত উপায়:  * ধ্যান: মন শান্ত করতে এবং ঘুম আনতে ধ্যান খুব কার্যকর।  * যোগব্যায়াম: কিছু যোগব্যায়াম ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে।  * ঘুমের ঔষধ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে এটা শুধুমাত্র অস্থায়ী সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। মনে রাখবেন, ঘুম আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই ঘুমের সমস্যা থাকলে তা অবহেলা না করে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। টেকনিক রাতে বিছানায় শুয়ে ঘুম না আসলে সত্যিই অনেক অস্বস্তিকর লাগে। তবে কিছু টেকনিক অনুসরণ করলে তাড়াতাড়ি ঘুম আসতে পারে। এখানে কিছু কার্যকর টেকনিক বলছি: শারীরিক টেকনিক:  * গভীর শ্বাস নেওয়া: চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে গভীর শ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করো। এতে মন শান্ত হবে এবং ঘুম আসবে।  * মাংসপেশী রিলাক্সেশন: পায়ের আঙ্গুল থেকে শুরু করে শরীরের প্রতিটি মাংসপেশী কিছুক্ষণ টানটান করে আবার ঢিলা ছেড়ে দাও। এটি শরীরকে শিথিল করবে এবং ঘুম আনতে সাহায্য করবে।  * গরম পানিতে স্নান: ঘুমানোর আগে গরম পানিতে স্নান করলে শরীর শিথিল হয় এবং ঘুম আসে। মানসিক টেকনিক:  * মেডিটেশন বা ধ্যান: মন থেকে সব চিন্তা দূর করে শুধু শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর মনোযোগ দাও। এটি মনকে শান্ত করবে এবং ঘুম আনতে সাহায্য করবে।  * চিন্তা থেকে মুক্তি: যদি কোনো চিন্তা তোমাকে ঘুমাতে না দেয়, তাহলে একটি কলম এবং কাগজ নিয়ে সেগুলো লিখে ফেলো। এতে মন হালকা হবে এবং ঘুম আসবে।  * কল্পনা: চোখ বন্ধ করে কোনো শান্ত এবং সুন্দর জায়গার কথা কল্পনা করো। এটি মনকে শান্ত করবে এবং ঘুম আনতে সাহায্য করবে। অন্যান্য টেকনিক:  * ৪-৭-৮ টেকনিক: ৪ সেকেন্ড ধরে নাক দিয়ে শ্বাস নাও, ৭ সেকেন্ড শ্বাস আটকে রাখো এবং ৮ সেকেন্ড ধরে মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়ো। এটি কয়েকবার করলে ঘুম আসতে পারে।  * ঘুমানোর আগে পড়া: ঘুমানোর আগে কোনো বই পড়লে মন শান্ত হয় এবং ঘুম আসতে সাহায্য করে।  * সাদা শব্দ: ফ্যান বা এসির শব্দ, বৃষ্টির শব্দ ইত্যাদি সাদা শব্দ ঘুম আনতে সাহায্য করতে পারে।  * ঘুমের ঔষধ: চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের ঔষধ গ্রহণ করা যেতে পারে। তবে এটা শুধুমাত্র অস্থায়ী সমাধান হিসেবে ব্যবহার করা উচিত। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়:  * ঘুমানোর আগে ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল গ্রহণ করো না।  * ঘুমানোর কমপক্ষে এক ঘন্টা আগে থেকে মোবাইল ফোন, কম্পিউটার বা টিভি ব্যবহার বন্ধ করে দাও।  * প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাও এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠো।  * ঘুমের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করো। আশা করি এই টেকনিকগুলো তোমাকে তাড়াতাড়ি ঘুম আনতে সাহায্য করবে।  

ঘুম না আসার কারণ কি ? দ্রুত ঘুমানোর টেকনিক Read Post »

Blogs

ব্রণ কেনো হয় ? প্রতিকার কি ? বিস্তারিত জানুন

ব্রণ ত্বকের একটি সাধারণ সমস্যা, বিশেষ করে কিশোর বয়সে। এটি ত্বকের ছিদ্রগুলো তেল, ময়লা এবং মৃত কোষ দ্বারা আটকে গেলে হয়। কেন হয়?  * হরমোনের পরিবর্তন: কিশোর বয়সে, ঋতুচক্রের সময়, গর্ভাবস্থায়, এবং কিছু ঔষধের কারণে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে যা ব্রণ হওয়ার একটি প্রধান কারণ।  * বংশগতি: পরিবারে ব্রণের ইতিহাস থাকলে ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।  * কিছু ঔষধ: কিছু ঔষধ, যেমন কর্টিসোন বা লিথিয়াম ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।  * তৈলাক্ত ত্বক: যাদের ত্বক তৈলাক্ত তাদের ব্রণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।  * অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: তেলেভাজা এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।  * মানসিক চাপ: মানসিক চাপ ব্রণ হওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ।  * ত্বকের অতিরিক্ত ঘষা: মুখ বেশি ঘষা বা কঠোর স্ক্রাব ব্যবহার ব্রণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়।  * মেকআপ: কিছু মেকআপ ত্বকের রন্ধ্র আটকে ব্রণ তৈরি করতে পারে। কীভাবে হয়? ১. ত্বকের রন্ধ্র (pores) তেল, ময়লা এবং মৃত কোষ দ্বারা আটকে যায়। ২. এই আটকে যাওয়ার ফলে ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। ৩. ব্যাকটেরিয়া ত্বকে প্রদাহ (inflammation) সৃষ্টি করে। ৪. প্রদাহের ফলে ব্রণ তৈরি হয়। কখন হয়? ব্রণ যেকোনো বয়সে হতে পারে, তবে কিশোর বয়সে এবং যুবাদের মধ্যে এটা বেশি হতে দেখা যায়।  প্রতিকার কি?  * মুখ নিয়মিত ধোয়া: দিনে দুইবার মৃদু ক্লিনজার দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন।  * তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা: তেলেভাজা এবং অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন।  * পর্যাপ্ত পানি পান করা: দিনে প্রচুর পানি পান করুন।  * মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ: ধ্যান বা যোগব্যায়ামের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করুন।  * মেকআপ সাবধানে ব্যবহার: নন-কমেডোজেনিক মেকআপ ব্যবহার করুন এবং ঘুমানোর আগে মেকআপ ভালোভাবে তুলে ফেলুন।  * ত্বক বেশি ঘষা থেকে বিরত থাকা: মুখ বেশি ঘষা বা কঠোর স্ক্রাব ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন। ওষুধ কি?  * ব্রণের ক্রিম: ব্রণের জন্য বিভিন্ন রকম ক্রিম বাজারে পাওয়া যায়। এই ক্রিমগুলো ত্বকের রন্ধ্র খোলা রাখতে এবং ব্যাকটেরিয়া নিরোধে সাহায্য করে।  * মৌখিক ঔষধ: কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার মৌখিক ঔষধ লিখে দিতে পারেন, যেমন অ্যান্টিবায়োটিক বা হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী ঔষধ। গুরুত্বপূর্ণ: যদি ব্রণের সমস্যা গুরুতর হয় তাহলে অবশ্যই একজন চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত। ধন্যবাদ!

ব্রণ কেনো হয় ? প্রতিকার কি ? বিস্তারিত জানুন Read Post »

Chemistry

ইলেকট্রন বিন্যাসের ভিত্তিতে মৌলের শ্রেণীবিভাগ

ইলেকট্রন বিন্যাসের ভিত্তিতে মৌলের শ্রেণীবিভাগ এই অংশে মূলত আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে মৌলগুলোকে তাদের ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে পর্যায় সারণিতে সাজানো হয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: ইলেকট্রন বিন্যাস: প্রতিটি পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলো নির্দিষ্ট শক্তিস্তরে (shell) এবং উপশক্তিস্তরে (subshell) থাকে। ইলেকট্রনগুলো কিভাবে এই শক্তিস্তর এবং উপশক্তিস্তরে সাজানো থাকে, তাকেই ইলেকট্রন বিন্যাস বলে। কোন মৌলের রাসায়নিক ধর্ম কি হবে, তা মূলত এই ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর নির্ভর করে। পর্যায় সারণির ব্লকসমূহ: পর্যায় সারণিতে মৌলগুলোকে বিভিন্ন ব্লকে (s, p, d, f) ভাগ করা হয়েছে। কোন মৌল কোন ব্লকে থাকবে তা নির্ভর করে শেষ ইলেকট্রনটি কোন উপশক্তিস্তরে প্রবেশ করেছে তার উপর। s-ব্লক: গ্রুপ ১ (ক্ষার ধাতু) এবং গ্রুপ ২ (মৃৎক্ষার ধাতু)। এরা খুবই সক্রিয় ধাতু। p-ব্লক: গ্রুপ ১৩ থেকে ১৮ পর্যন্ত। এখানে ধাতু, অধাতু এবং উপধাতু সব ধরনের মৌল আছে। d-ব্লক: গ্রুপ ৩ থেকে ১২ পর্যন্ত। এদেরকে অবস্থান্তর মৌল বলা হয়। এরা বিভিন্ন রকমের জারণ অবস্থা দেখায় এবং এদের যৌগগুলো প্রায়ই রঙিন হয়। f-ব্লক: এদেরকে অন্তর্বর্তী অবস্থান্তর মৌল বলা হয়। ল্যান্থানাইড এবং অ্যাক্টিনাইড সিরিজ এখানে পড়ে। পর্যায় সারণির নিচে আলাদাভাবে এদের স্থান দেওয়া হয়। ব্লকের মধ্যে মৌলের ধর্ম: একই ব্লকের মৌলগুলোর ইলেকট্রন বিন্যাস একই রকম হওয়ায় এদের রাসায়নিক এবং ভৌত ধর্ম অনেকটা মিলে যায়। উপসংহার: ইলেকট্রন বিন্যাস এবং পর্যায় সারণির ব্লক সম্পর্কে ভালোভাবে জানা থাকলে, বিভিন্ন মৌলের ধর্ম এবং তাদের যৌগ সম্পর্কে আন্দাজ করা সহজ হয়।

ইলেকট্রন বিন্যাসের ভিত্তিতে মৌলের শ্রেণীবিভাগ Read Post »

Chemistry

পর্যায় সারণির ইতিহাস: এক নজরে

পর্যায় সারণির ইতিহাস: এক নজরে পর্যায় সারণি, রসায়নবিদ্যার এই অপরিহার্য সহায়িকা, একদিনে তৈরি হয়নি। এর পেছনে রয়েছে দীর্ঘ ইতিহাস, অনেক বিজ্ঞানীর অক্লান্ত পরিশ্রম ও গবেষণা। চলুন, এই ইতিহাসের কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাপ্রবাহ দেখে নেওয়া যাক: প্রাথমিক প্রচেষ্টা: ত্রয়ী সূত্র (Dobereiner’s Triads): ১৮১৭ সালে, জার্মান রসায়নবিদ Johann Wolfgang Döbereiner লক্ষ্য করেন যে, কিছু মৌল ত্রয়ী (triads) আকারে এমনভাবে সাজানো যায় যেখানে মধ্যবর্তী মৌলটির ভর অন্য দুটি মৌলের ভরের গড়। তিনি একে ত্রয়ী সূত্র বলেন। অষ্টক সূত্র (Law of Octaves): ১৮৬৫ সালে, ইংরেজ রসায়নবিদ John Newlands মৌলগুলোকে পরমাণু ভর অনুসারে সাজিয়ে দেখতে পান যে, প্রতি আটটি মৌল পরে পরে একই ধরনের রাসায়নিক ধর্ম ফিরে আসে। তিনি একে অষ্টক সূত্র নাম দেন। মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি: ১৮৬৯ সালে, রুশ রসায়নবিদ দিমিত্রি মেন্ডেলিফ ৬৩ টি জ্ঞাত মৌলকে পরমাণু ভর অনুসারে সাজিয়ে একটি সারণি তৈরি করেন। তিনি লক্ষ্য করেন যে, এভাবে সাজালে মৌলগুলোর ধর্ম একটি নির্দিষ্ট পর্যায়ে পুনরাবৃত্তি হয়। মেন্ডেলিফ তার সারণিতে কিছু খালি স্থান রেখে দিয়েছিলেন যেখানে তখনও অজানা মৌলগুলো থাকবে বলে তিনি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণি আধুনিক পর্যায় সারণির ভিত্তি স্থাপন করে। আধুনিক পর্যায় সারণি: মোসলের অবদান: ১৯১৩ সালে, ইংরেজ পদার্থবিদ Henry Moseley মৌলের পরমাণু সংখ্যা নির্ণয় করেন এবং দেখান যে, পর্যায় সারণিতে মৌলগুলোকে পরমাণু সংখ্যা অনুসারে সাজানো উচিত। সিবর্গের অবদান: Glenn T. Seaborg অ্যাক্টিনাইড শ্রেণীর মৌলগুলো আবিষ্কার করেন এবং পর্যায় সারণিতে f-ব্লক যুক্ত করেন। উপসংহার: পর্যায় সারণি একটি ক্রমবর্ধমান ও গতিশীল বিষয়। নতুন নতুন মৌল আবিষ্কৃত হওয়ার সাথে সাথে এটি আরও সমৃদ্ধ হচ্ছে। এই সারণি রসায়নবিদ্যার একটি অপরিহার্য অংশ এবং এটি আমাদের মৌল ও তাদের ধর্ম সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে সাহায্য করে। পর্যায় সারণির ইতিহাস: আরও কিছু তথ্য আগের আলোচনার সাথে আরও কিছু তথ্য যোগ করলে পর্যায় সারণির ইতিহাস সম্পর্কে আমাদের ধারণা আরও সমৃদ্ধ হবে: অন্তর্বর্তী উন্নয়ন: অ্যান্টোইন লাভয়সিয়ে: ১৭৮৯ সালে, লাভয়সিয়ে প্রথম মৌলের একটি তালিকা প্রকাশ করেন। তিনি মৌলগুলোকে ধাতু, অধাতু, এবং “মৃৎ” (earths) হিসেবে শ্রেণিবদ্ধ করেন। জ্যাকব বার্জেলিয়াস: পরমাণু ভর নির্ণয়ের ক্ষেত্রে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে, যা পরবর্তীতে মৌলগুলোকে সঠিকভাবে সাজাতে সাহায্য করেছিল। জুলিয়াস লোথার মেয়ার: ১৮৬৪ সালে, মেয়ার একটি পর্যায় সারণি প্রকাশ করেন যেখানে ২৮ টি মৌলকে যোজনী অনুসারে সাজানো ছিল। মেন্ডেলিফের অবদানের গুরুত্ব: মেন্ডেলিফ শুধু মৌলগুলোকে সাজাননি, বরং তিনি অজানা মৌলের ধর্ম সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, যা পরে সত্য প্রমাণিত হয়েছিল। উদাহরণস্বরূপ, তিনি “একা-সিলিকন” নামক একটি মৌলের অস্তিত্ব ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, যা পরে জার্মেনিয়াম হিসেবে আবিষ্কৃত হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর উন্নয়ন: রেডিওঅ্যাক্টিভ মৌল: রেডিওঅ্যাক্টিভ মৌলের আবিষ্কার পর্যায় সারণিতে নতুন মাত্রা যোগ করে। কৃত্রিম মৌল: বিজ্ঞানীরা নতুন কৃত্রিম মৌল তৈরি করতে সক্ষম হয়েছেন, যা পর্যায় সারণির আকার আরও বৃদ্ধি করেছে। উপসংহার: পর্যায় সারণির ইতিহাস একটি দীর্ঘ ও মনোমুগ্ধকর যাত্রা। এটি বিজ্ঞানের অগ্রগতির একটি প্রমাণ এবং আমাদের মৌল ও রসায়ন সম্পর্কে ধারণার ক্রমবিকাশের একটি চমৎকার উদাহরণ। ইলেকট্রন বিন্যাসের ভিত্তিতে মৌলের শ্রেণীবিভাগ এই অংশে মূলত আলোচনা করা হয়েছে কিভাবে মৌলগুলোকে তাদের ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর ভিত্তি করে পর্যায় সারণিতে সাজানো হয়েছে। কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়: ইলেকট্রন বিন্যাস: প্রতিটি পরমাণুতে ইলেকট্রনগুলো নির্দিষ্ট শক্তিস্তরে (shell) এবং উপশক্তিস্তরে (subshell) থাকে। ইলেকট্রনগুলো কিভাবে এই শক্তিস্তর এবং উপশক্তিস্তরে সাজানো থাকে, তাকেই ইলেকট্রন বিন্যাস বলে। কোন মৌলের রাসায়নিক ধর্ম কি হবে, তা মূলত এই ইলেকট্রন বিন্যাসের উপর নির্ভর করে। পর্যায় সারণির ব্লকসমূহ: পর্যায় সারণিতে মৌলগুলোকে বিভিন্ন ব্লকে (s, p, d, f) ভাগ করা হয়েছে। কোন মৌল কোন ব্লকে থাকবে তা নির্ভর করে শেষ ইলেকট্রনটি কোন উপশক্তিস্তরে প্রবেশ করেছে তার উপর। s-ব্লক: গ্রুপ ১ (ক্ষার ধাতু) এবং গ্রুপ ২ (মৃৎক্ষার ধাতু)। এরা খুবই সক্রিয় ধাতু। p-ব্লক: গ্রুপ ১৩ থেকে ১৮ পর্যন্ত। এখানে ধাতু, অধাতু এবং উপধাতু সব ধরনের মৌল আছে। d-ব্লক: গ্রুপ ৩ থেকে ১২ পর্যন্ত। এদেরকে অবস্থান্তর মৌল বলা হয়। এরা বিভিন্ন রকমের জারণ অবস্থা দেখায় এবং এদের যৌগগুলো প্রায়ই রঙিন হয়। f-ব্লক: এদেরকে অন্তর্বর্তী অবস্থান্তর মৌল বলা হয়। ল্যান্থানাইড এবং অ্যাক্টিনাইড সিরিজ এখানে পড়ে। পর্যায় সারণির নিচে আলাদাভাবে এদের স্থান দেওয়া হয়। ব্লকের মধ্যে মৌলের ধর্ম: একই ব্লকের মৌলগুলোর ইলেকট্রন বিন্যাস একই রকম হওয়ায় এদের রাসায়নিক এবং ভৌত ধর্ম অনেকটা মিলে যায়। উপসংহার: ইলেকট্রন বিন্যাস এবং পর্যায় সারণির ব্লক সম্পর্কে ভালোভাবে জানা থাকলে, বিভিন্ন মৌলের ধর্ম এবং তাদের যৌগ সম্পর্কে আন্দাজ করা সহজ হয়।

পর্যায় সারণির ইতিহাস: এক নজরে Read Post »

Login