a summary of Rabindranath Tagore’s “Letter to Lord Chelmsford Rejecting Knighthood” in Bengali

Table of Contents

a summary of Rabindranath Tagore’s “Letter to Lord Chelmsford Rejecting Knighthood” in Bengali, presented as a story:


নাইট উপাধি প্রত্যাখ্যান করে লর্ড চেমসফোর্ডকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিঠি

গল্পটি শুরু হয় ১৯১৯ সালের এপ্রিল মাসে, যখন ব্রিটিশ ভারতের ভাইসরয় লর্ড চেমসফোর্ডকে লেখা রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি চিঠিকে কেন্দ্র করে। এই চিঠিটি ছিল জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘নাইট’ উপাধি (Knighthood) ত্যাগের এক ঐতিহাসিক দলিল।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, যিনি তৎকালীন ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক ১৯১৫ সালে ‘স্যার’ উপাধি পেয়েছিলেন, এই উপাধিটি পেয়ে সম্মানিত বোধ করেছিলেন। কিন্তু ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল অমৃতসরের জালিয়ানওয়ালাবাগে ব্রিটিশ জেনারেল ডায়ারের নির্দেশে নিরস্ত্র ভারতীয়দের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়। এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডে শত শত নিরীহ মানুষ নিহত এবং আহত হন।

এই মর্মান্তিক ঘটনায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর গভীরভাবে মর্মাহত এবং ক্ষুব্ধ হন। তিনি অনুভব করেন যে, যে সরকার এমন অমানবিক কাজ করতে পারে, সেই সরকারের কাছ থেকে কোনো সম্মানসূচক উপাধি গ্রহণ করে থাকা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁর বিবেক তাকে এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে বাধ্য করে।

চিঠিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর অত্যন্ত স্পষ্ট ভাষায় তার সিদ্ধান্ত এবং এর পেছনের যুক্তি তুলে ধরেন। তিনি লিখেন যে, “যে সরকার তার নিজের প্রজাদের ওপর এমন পাশবিক অত্যাচার চালায়, সেই সরকারের প্রতি আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে আমি কোনো উপাধি ধারণ করতে পারি না।” তিনি আরও উল্লেখ করেন যে, এই হত্যাকাণ্ড কেবল একটি অন্যায় নয়, এটি ছিল এক চরম অপমান, যা ভারতীয়দের মানবিক মর্যাদাকে পদদলিত করেছে।

রবীন্দ্রনাথ তাঁর চিঠিতে জোর দিয়ে বলেন যে, ভারতীয় জনগণের প্রতি যে অবজ্ঞা এবং ঔদ্ধত্য দেখানো হয়েছে, তার প্রতিবাদে তিনি তাঁর সমস্ত সম্মান ত্যাগ করতে প্রস্তুত। তিনি লেখেন, “আমার মনে হয়, এই সময়ে সকল বিশেষ সম্মানচিহ্ন, যা আমাকে আমার স্বদেশবাসীর থেকে দূরে সরিয়ে রাখে, তা বর্জন করার সময় এসেছে।” তিনি অনুভব করেন যে, যখন তাঁর দেশের মানুষ এমন চরম অবমাননার শিকার, তখন ব্যক্তিগত সম্মান নিয়ে থাকাটা তার কাছে লজ্জাজনক।

তিনি আরও বলেন যে, “এই চরম শোকের সময়ে, যখন সমগ্র দেশ বেদনা ও অপমানে জ্বলছে, তখন আমি নীরব থাকতে পারি না। আমার দেশের মানুষ যে কষ্ট ভোগ করছে, তার থেকে নিজেকে আলাদা করে রাখলে আমি আমার বিবেককে শান্ত রাখতে পারব না।”

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর এই চিঠির মাধ্যমে কেবল একটি উপাধি ত্যাগ করেননি, তিনি ঔপনিবেশিক শাসনের প্রতি এক কঠোর নৈতিক প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র ব্রিটিশ সরকারের প্রতি তাঁর ব্যক্তিগত ক্ষোভ ছিল না, বরং এটি ছিল ঔপনিবেশিক দমন-পীড়নের বিরুদ্ধে ভারতীয় জনগণের সম্মিলিত প্রতিবাদের এক শক্তিশালী কণ্ঠস্বর।

এই চিঠিটি ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে। এটি দেখায় যে কীভাবে একজন শিল্পী ও দার্শনিকও প্রয়োজনে তাঁর শিল্পের জগৎ ছেড়ে জাতির দুর্দিনে প্রতিবাদে শামিল হতে পারেন এবং নৈতিকতার প্রশ্নে কোনো আপস করতে পারেন না। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের এই পদক্ষেপ সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে এবং ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে নৈতিক প্রতিরোধের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করে।


Today's Lesson

The Courses

Search Here

looking for something ?

Categories