a summary of James Joyce’s “Araby” in Bengali, presented as a story:
জেমস জয়েসের ‘অ্যারাবি’ গল্পের সারসংক্ষেপ:
গল্পটি আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনের একটি নির্জন গলির বর্ণনা দিয়ে শুরু হয়, যেখানে পুরনো, ধূসর বাড়িগুলো সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে। এটি একটি কিশোর ছেলের দৃষ্টিকোণ থেকে বলা হয়েছে, যে তার কাকা ও কাকিমার সাথে তাদের পুরানো বাড়িতে থাকে। এই গলি আর বাড়িগুলো তার জীবনে একঘেয়েমি আর ধূসরতা নিয়ে আসে।
এই একঘেয়ে জীবনের মধ্যে তার একমাত্র আনন্দ এবং আকর্ষণ ছিল পাশের বাড়ির মঙ্গান সাহেবের বোন। মেয়েটি প্রতিদিন স্কুল থেকে ফেরার সময় বা সকালবেলা যখন গলিতে আসত, তখন ছেলেটি তার দিকে তাকিয়ে থাকত। মেয়েটি তার জন্য এক ধরনের রহস্যময় আকর্ষণ ছিল। তার নাম ছিল ম্যাংগানস সিস্টার (মঙ্গান সাহেবের বোন), এবং সে যেন ছেলেটির কাছে এক পবিত্র স্বপ্নের মতো ছিল। ছেলেটি তার প্রতি এমন এক অনুভূতি পোষণ করত যা শুধু ভালো লাগা নয়, বরং এক ধরনের ধর্মীয় ভক্তি বা উপাসনার মতো ছিল। সে মেয়েটিকে দেখত আর তার দিনগুলো যেন অর্থ খুঁজে পেত। তার মনে হতো যেন মেয়েটি তার জীবনের একমাত্র আলো।
এক সন্ধ্যায়, যখন ছেলেটি গলির উঠোনে খেলা করছিল, তখন মেয়েটি তার সাথে কথা বলতে আসে। মেয়েটি তাকে জিজ্ঞাসা করে যে সে কি ‘অ্যারাবি’ মেলায় (একটি ওরিয়েন্টাল বাজার বা মেলা) যাবে কিনা। মেয়েটি নিজে যেতে পারবে না কারণ সেই সময় তাদের গির্জায় এক পুনরুজ্জীবন সভা আছে। এই কথা শুনে ছেলেটি খুব উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ প্রতিজ্ঞা করে যে, সে যদি মেলায় যায়, তবে সে মেয়েটির জন্য কিছু একটা নিয়ে আসবে।
এই প্রতিজ্ঞা করার পর থেকে ছেলেটির জীবনে এক নতুন অর্থ আসে। ‘অ্যারাবি’ মেলা তার কাছে শুধু একটি মেলা থাকে না, বরং সেটি হয়ে ওঠে একটি স্বপ্নের জগত, যেখানে সে তার ভালোবাসার জন্য কিছু আনতে পারবে। মেলা তার কাছে প্রাচ্যের এক রহস্যময় পৃথিবীর প্রতীক হয়ে ওঠে। তার দিনগুলি কাটে মেলার চিন্তায় আর ম্যাংগানের বোনের মুখচ্ছবিতে। সে এতটাই বিভোর হয়ে যায় যে, স্কুলের পড়া বা চারপাশের পরিবেশ তার কাছে তুচ্ছ মনে হয়। তার একমাত্র লক্ষ্য হয় এই মেলায় যাওয়া এবং মেয়েটির জন্য একটি উপহার কেনা।
মেলার দিন ঘনিয়ে আসে। স্কুল থেকে ফিরে ছেলেটি অধীর আগ্রহে তার কাকার জন্য অপেক্ষা করতে থাকে। তার কাকা কাজ থেকে ফিরলে তবেই সে টাকা পাবে। কিন্তু কাকা দেরিতে ফেরেন এবং যখন ফেরেন, তখন তিনি কিছুটা মাতাল অবস্থায় থাকেন। ছেলেটি বারবার মনে করিয়ে দেওয়ার পরও কাকা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন। অবশেষে অনেক বলার পর কাকা তাকে কিছু টাকা দেন, কিন্তু ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে।
ছেলেটি তাড়াহুড়ো করে মেলায় পৌঁছায়। কিন্তু মেলায় পৌঁছে সে এক অন্যরকম দৃশ্য দেখে। যে ‘অ্যারাবি’ মেলা তার স্বপ্নে এত জাঁকজমকপূর্ণ ছিল, সেটি বাস্তবে ছিল অন্ধকারাচ্ছন্ন, প্রায় জনশূন্য একটি ছোটখাটো বাজার। বেশিরভাগ দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেছে। কয়েকটি দোকানে কেবল শেষ মুহূর্তে জিনিসপত্র গোছানো হচ্ছে।
সে একটি স্টলে যায় যেখানে কিছু চিনা মাটির বাসনপত্র বিক্রি হচ্ছে। সেখানে দুজন ইংরেজ ছেলেমেয়ে বিক্রেতার সাথে ফরাসি ভাষায় হাসাহাসি করে কথা বলছে। তাদের কথায় এবং মেলার নিস্তব্ধতায় ছেলেটির মন ভেঙে যায়। যে পবিত্র অনুভূতি নিয়ে সে মেলায় এসেছিল, সেই অনুভূতি তার কাছে মূল্যহীন মনে হতে থাকে।
ছেলেটির হাতে যে ক’টা টাকা ছিল, তা দিয়ে সে কিছুই কিনতে পারে না। মেলার জীর্ণতা, নিস্তব্ধতা এবং তার নিজের অসহায়ত্ব তাকে গভীরভাবে হতাশ করে। সে অনুভব করে যে তার সব স্বপ্ন, তার সব রোমান্টিক ধারণা ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। সে যেন অন্ধকার এক কোণে দাঁড়িয়ে নিজেকে দেখতে পায়, তার চোখ জলে ভরে ওঠে, কারণ তার ভেতরের আলো নিভে গেছে।
গল্পটি কৈশোরের মোহমুক্তি, রোমান্টিকতার সাথে বাস্তবতার নিষ্ঠুর সংঘাত এবং স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনাকে তুলে ধরে। ‘অ্যারাবি’ মেলাটি আসলে কিশোরের অবাস্তব স্বপ্নের প্রতীক, যা শেষ পর্যন্ত বাস্তবতার কঠোর মুখোমুখি হয়ে ভেঙে যায়।