মাইগ্রেন কি? কেনো হয়? করণীয় কি?

Table of Contents

মাইগ্রেন : একটি নিউরোলজিক্যাল রোগ

মাইগ্রেন কেবল মাথাব্যথা নয়, এটি একটি জটিল নিউরোলজিক্যাল রোগ যা মাথার একপাশে স্পন্দিত ব্যথা, বমি বমি ভাব, বমি, আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা সৃষ্টি করে। এই ব্যথা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে।

মাইগ্রেন কেন হয়?

মাইগ্রেনের সঠিক কারণ এখনও অজানা, তবে বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে মস্তিষ্কের রক্তনালী এবং স্নায়ু কোষের অস্বাভাবিক কার্যকলাপ এই রোগের জন্য দায়ী। এছাড়াও বংশগতি, পরিবেশগত কারণ, জীবনযাত্রা এবং হরমোনের পরিবর্তন মাইগ্রেনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

কিছু সম্ভাব্য কারণ:

 * মস্তিষ্কের রাসায়নিক পদার্থের পরিবর্তন: সেরোটোনিন এবং অন্যান্য নিউরোট্রান্সমিটারের মাত্রার পরিবর্তন মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে।

 * মস্তিষ্কের রক্তনালীর অস্বাভাবিক কার্যকলাপ: রক্তনালীর প্রসারণ এবং সংকোচন মাথাব্যথা সৃষ্টি করতে পারে।

 * ট্রাইজেমিনাল স্নায়ুর উদ্দীপনা: এই স্নায়ু মুখ এবং মাথার সংবেদন নিয়ন্ত্রণ করে। এর উদ্দীপনা মাইগ্রেনের ব্যথা ট্রিগার করতে পারে।

 * বংশগতি: পারিবারিক ইতিহাস মাইগ্রেনের ঝুঁকি বাড়ায়।

 * ট্রিগার: কিছু খাবার, পানীয়, চাপ, ঘুমের অভাব, আলো, শব্দ, এবং আবহাওয়ার পরিবর্তন মাইগ্রেন ট্রিগার করতে পারে।

কাদের হয়?

মাইগ্রেন যে কোন বয়সের মানুষের হতে পারে, তবে এটি প্রধানত যুবক এবং মধ্যবয়সী মানুষের মধ্যে বেশি দেখা যায়। মহিলাদের মধ্যে মাইগ্রেন হওয়ার হার পুরুষদের তুলনায় বেশি।

প্রতিকার:

মাইগ্রেনের কোন স্থায়ী নিরাময় নেই, তবে এর লক্ষণ নিয়ন্ত্রণ এবং আক্রমণের তীব্রতা কমানোর জন্য বিভিন্ন প্রতিকার পদ্ধতি রয়েছে।

 * জীবনযাত্রার পরিবর্তন: নিয়মিত ঘুম, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, চাপ নিয়ন্ত্রণ, এবং ট্রিগার এড়িয়ে চলা মাইগ্রেন প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে।

 * ওষুধ: ব্যথানাশক, বমি প্রতিরোধক, এবং মাইগ্রেন নির্দিষ্ট ওষুধ (যেমন ট্রিপটান) মাইগ্রেনের লক্ষণ কমাতে সাহায্য করে।

 * অন্যান্য চিকিৎসা: অ্যাকিউপাংচার, ম্যাসাজ, এবং যোগব্যায়াম কিছু ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে।

ওষুধ:

 * ব্যথানাশক: অ্যাসিটামিনোফেন, আইবুপ্রোফেন, নেপ্রোক্সেন ইত্যাদি।

 * ট্রিপটান: সুমাত্রিপটান, রিজাত্রিপটান, জোলমিট্রিপটান ইত্যাদি।

 * এরগোট ডেরিভেটিভস: এরগোটামিন, ডিহাইড্রোয়েরগোটামিন ইত্যাদি।

 * অ্যান্টিমেটিক্স: মেটোক্লোপ্রামাইড, প্রোক্লোরপেরাজিন ইত্যাদি।

 * প্রতিরোধমূলক ওষুধ: বিটা-ব্লকার, ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার, অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ইত্যাদি।

গুরুত্বপূর্ণ: মাইগ্রেনের চিকিৎসার জন্য অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

 

Login