রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেল
১৯১১ সালে, আর্নেস্ট রাদারফোর্ড তার বিখ্যাত স্বর্ণপাতের পাতলা পাতের উপর আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষার মাধ্যমে পরমাণুর গঠন সম্পর্কে একটি নতুন মডেল প্রস্তাব করেন। এই পরীক্ষার ফলাফল থেকে তিনি উপসংহারে আসেন যে পরমাণুর অধিকাংশ স্থান ফাঁকা এবং এর কেন্দ্রে একটি ধনাত্মক চার্জযুক্ত ভারী কেন্দ্র রয়েছে যা পরমাণুর প্রায় সমস্ত ভর ধারণ করে। এই কেন্দ্রকে তিনি নিউক্লিয়াস নাম দেন।
রাদারফোর্ডের মডেলের মূল বৈশিষ্ট্য
- নিউক্লিয়াস: পরমাণুর কেন্দ্রে একটি ধনাত্মক চার্জযুক্ত ভারী নিউক্লিয়াস থাকে।
- ইলেকট্রন: ঋণাত্মক চার্জযুক্ত ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসকে কেন্দ্র করে ঘোরে।
- ফাঁকা স্থান: পরমাণুর অধিকাংশ স্থান ফাঁকা।
রাদারফোর্ডের মডেলের সফলতা
- আলফা কণা বিচ্ছুরণ পরীক্ষার ফলাফল ব্যাখ্যা করতে সক্ষম হয়।
- পরমাণুর ভর এবং চার্জের বন্টন সম্পর্কে ধারণা দেয়।
রাদারফোর্ডের মডেলের সীমাবদ্ধতা:
- ইলেকট্রনের স্থায়িত্ব ব্যাখ্যা করতে পারে না। ক্লাসিক্যাল পদার্থবিদ্যার নিয়মানুসারে, নিউক্লিয়াসের চারপাশে ঘূর্ণায়মান ইলেকট্রনগুলির শক্তি বিকিরণ করে নিউক্লিয়াসে পতিত হওয়া উচিত।
- পরমাণুর বর্ণালী রেখা ব্যাখ্যা করতে পারে না।
কিছু তথ্য ও ফ্যাক্ট:
- রাদারফোর্ডের পরীক্ষায় ব্যবহৃত স্বর্ণপাতের পাতটি মাত্র কয়েকটি পরমাণু পুরু ছিল।
- আলফা কণাগুলি তেজস্ক্রিয় পদার্থ থেকে নির্গত হিলিয়াম নিউক্লিয়াস।
- রাদারফোর্ডের মডেলকে “প্ল্যানেটারি মডেল” বলা হয় কারণ এটি সৌরজগতের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ।
উপসংহার:
রাদারফোর্ডের পরমাণু মডেলটি যদিও পরমাণুর গঠন সম্পর্কে আমাদের বোঝার একটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ ছিল, তবুও এর কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। পরবর্তীতে বোর এবং অন্যান্য বিজ্ঞানীরা রাদারফোর্ডের মডেলের ত্রুটিগুলি সংশোধন করে আরও উন্নত মডেল তৈরি করেন।